একজন Investor কীভাবে Stock Market সম্পর্কে জানতে পারবে
শেয়ার বাজার বা পুজিঁবাজার হল এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করা হয়। কোম্পানির সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের জন্য কোম্পানিগুলো সাধারণ জনগণ, সরকার ও প্রতিষ্ঠানের কাছে শেয়ার বিক্রয়ের মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ করে। কোম্পানির যদি আর্থিক অগ্রগতি হয়, সেক্ষেত্রে শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি পায় এবং বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রয় করে মুনাফা অর্জন করেন। এছাড়াও কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ (Dividend) দিয়ে থাকে। কোম্পানির পারফর্মেন্স এবং দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের সাথে সাথে শেয়ারের মূল্য ওঠানামা করে।
একজন বিনিয়োগকারীকে শেয়ার ব্যবসায় উন্নতি করতে হলে সবসময় শেয়ার বাজারের গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে অবগত থাকতে হয়। শেয়ার বাজারের ট্রেন্ড বুঝতে একজন বিনিয়োগকারী কিছু সহজ পন্থা অবলম্বন করতে পারেন।
এই উপায়গুলো নিন্মে বিস্তারিত আলোচনা করা হলঃ
- Royal Capital Lt. কর্তৃক ক্লায়েন্টদের জন্য নিয়মিতভাবে শেয়ার বাজার সম্পর্কিত Daily, Weekly & Monthly রিপোর্ট বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় প্রকাশ করা হয় এবং “RCL Adda” ব্লগে সাম্প্রতিক বিষয়গুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন নিউজপেপার বা ওয়েব পোর্টালে শেয়ার বাজার সম্পর্কে নিয়মিত তথ্য ও খবরাখবরে চোখ রাখলে শেয়ার বাজারের গতানুগতিক বিষয়গুলো জানতে পারা যায়।
- Stock Exchange এ Market Trend এর দিকে নজর রাখতে হবে। Dhaka Stock Exchange(DSE) এবং Chittagong Stock Exchange(CSE) এর ওয়েবসাইটে প্রতিদিনের আপডেটেড তথ্যের পাশাপাশি, জনপ্রিয় স্টক, বাজারে ট্রেড ও ভলিউমের গতিপ্রকৃতি ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া থাকে।
- প্রধান Stock Index গুলোর দিকে খেয়াল করলে শেয়ার বাজার সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। প্রতিটি Stock Exchange আলাদা আলাদা কিছু Stock Index প্রকাশ করে থাকে। Dhaka Stock Exchange (DSE) কর্তৃক প্রকাশিত Index গুলো হলো DSEX, DSES, DS30 ও CDSET। Chittagong Stock Exchange (CSE) কর্তৃক প্রকাশিত Index গুলো হলো CSCX, CSI, CSE30 ও CASPI।
DSEX সম্পূর্ণ বাজারের শতকরা Share Market এ বাজার মূলধনের একটি সমন্বিত চিত্র প্রকাশ করে।
- সাধারণভাবে একটি দেশের Share market ঐ দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার প্রতিফলন। একটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অধিক উৎপাদন নির্দেশ করে এবং উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে, দেশের অধিকাংশ কোম্পানির আয় বৃদ্ধি পায়। কোম্পানি যখন অধিক হারে মুনাফা অর্জন করে, তখন তারা শেয়ারহোল্ডারদেরকে তুলনামূলকভাবে বেশি পরিমাণে লভ্যাংশ প্রদান করে থাকে, এ কারণে কোম্পানি গুলোর শেয়ার বিনিয়োগকারীদের কাছে আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে এবং শেয়ার বাজারে ট্রেডিং বেড়ে যায়। আবার যখন অর্থনীতিতে মন্দাভাব বিদ্যমান থাকে, তখন কোম্পানিগুলো অধিকহারে লভ্যাংশ প্রদান করতে পারে না এবং বাজারে শেয়ারের দাম হ্রাস পায়।
- একজন বিনিয়োগকারীকে কোনো নির্দিষ্ট industry এর শেয়ারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঐ industry এর অতীত আয়ের প্রবণতা, শেয়ারের চাহিদা ও যোগানের পরিমাণ এবং সম্ভাব্য আয় সম্পর্কে বিবেচনা করতে হবে। এভাবে একজন বিনিয়োগকারী কোন industry তে বিনিয়োগের মাধ্যমে অধিক লাভবান হতে পারবেন সে সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন। বিনিয়োগের জন্য উদীয়মান এবং প্রগতিশীল শিল্প চিহ্নিত করতে দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে এবং আন্তর্জাতিকভাবে যে সকল শিল্পের চাহিদা সৃষ্টি হচ্ছে।
- আপনি যে সকল কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করতে ইচ্ছুক তাদের ১ বছরের সর্বোচ্চ ও সর্বনি Share Price Analysis করলে শেয়ারের গড়মূল্য সম্পর্কে একটি ধারণা পাওয়া যাবে। Graph টিতে আমরা সর্বশেষ ১ বছরের RECKITTBEN কোম্পানির শেয়ারের সর্বোচ্চ ও সর্বনিন্ম দামের একটি সমন্বিত চিত্র দেখতে পাচ্ছি যা থেকে investor বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবেন।
- কোনো নির্দিষ্ট কোম্পানির Stock Evaluate করতে সেই কোম্পানির Income statement, Balance Sheet ও Cash-flow Statement analysis করে কোম্পানি সম্পর্কে ধারণা নিতে পারে। Financial statement থেকে কোম্পানির বর্তমান ও ভবিষ্যত পারফর্মেন্স সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
- বিনিয়োগের জন্য ভালো মৌল ভিত্তিক কোম্পানি চিহ্নিত করতে Fundamental Analysis অত্যন্ত জরুরি। Fundamental Analysis সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করতে রয়্যাল ক্যাপিটাল লিমিটেড “ বিনিয়োগ সম্পর্কে মৌলিক ধারণা নামক একটি বই প্রকাশ করেছে। যা আপনি নিচের লিঙ্কটি ভিজিট করে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পেতে পারেন- Fundamental Analysis Basics Book
কোম্পানির Financial statement থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তাদের পারফর্মেন্স সম্পর্কে আরও ভাল ধারণা পেতে বিনিয়োগকারী Ratio analysis এর সাহায্য নিতে পারে, যা Fundamental Analysis এর একটি অংশ। কিছু জনপ্রিয় Ratio সম্পর্কে আলোচনা করা হল-- EPS (Earnings Per Share): একটি কোম্পানির প্রতিটি শেয়ারের জন্য কর পরবর্তী মুনাফাকে তার Earning per Share (EPS) বলা হয়। শেয়ার প্রতি কর পরবর্তী মুনাফা যত বেশি তা কোম্পানির জন্য তত ভালো।
- Price Earnings Ratio (P/E Ratio): এই Ratio এর মাধ্যমে শেয়ার বাজারে প্রতিটি শেয়ারের মূল্য এবং প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে কোম্পানি কি পরিমাণ আয় করে থাকে তার অনুপাত বিশ্লেষণ করা হয়। শেয়ারের মূল্য ও আয়ের অনুপাত যত কম হবে বিনিয়োগে ঝুঁকির পরিমাণ তত কম হবে।
- Dividend Yield: এই Ratio এর মাধ্যমে কোম্পানির শেয়ার প্রতি লভ্যাংশ ও তার বাজারমূল্যের অনুপাত নির্নয় করা হয়। শেয়ার প্রতি লভ্যাংশ যত বেশি হবে তত ভালো।
- EPS (Earnings Per Share): একটি কোম্পানির প্রতিটি শেয়ারের জন্য কর পরবর্তী মুনাফাকে তার Earning per Share (EPS) বলা হয়। শেয়ার প্রতি কর পরবর্তী মুনাফা যত বেশি তা কোম্পানির জন্য তত ভালো।
- Technical Analysis বিনিয়োগের প্রায়োগিক জ্ঞান। শেয়ার ব্যবসায় করে আর্থিকভাবে লাভবান হতে হলে Technical Analysis সম্পর্কে ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরি। রয়্যাল ক্যাপিটাল লিমিটেড নতুন বিনিয়োগকারীদের কে Technical Analysis সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার জন্য একটি বই প্রকাশ করেছে। বইটি পেতে যোগাযোগ করুন রয়্যাল ক্যাপিটাল লিমিটেডের যেকোনো শাখায়। এছাড়াও রকমারি.কম এ বইটি সুলভমূল্যে পাওয়া যাচ্ছে।
- শেয়ার ব্যবসায় করে আর্থিকভাবে লাভবান হতে হলে Market Intelligence সম্পর্কে ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরি। একজন বিনিয়োগকারীকে অবশ্যই Price Sensitive Information গুলোকে (যেমন: Dividend, EPS, Record Date ইত্যাদি) চিহ্নিত করতে পারতে হবে এবং সে অনুযায়ী দ্রত ও সময়পোযোগী বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এছাড়া শেয়ার বাজার সম্পকে Up-to-date তথ্য ও খবরাখবর সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরি। তবে একজন বিনিয়োগকারীকে অবশ্যই Rumor যাচাই করতে পারতে হবে এবং False News থেকে দূরে থাকতে হবে নতুবা ব্যপকহারে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। ভবিষ্যতে একজন বিনিয়োগকারী কীভাবে শেয়ার বাজার সম্পর্কিত Rumor বা News যাচাই করতে পারেন সেসম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
উপরে বর্ণিত উপায়গুলো অবলম্বন করে একজন বিনিয়োগকারী শেয়ার বাজার সম্পর্কে ধারণা অর্জন করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
আমাদের দেশে দুইটি স্টক এক্সচেঞ্জ রয়েছে: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (DSE) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (CSE)। বর্তমানে স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইট থেকে শেয়ার মার্কেটের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে নিয়মিত আপডেট পাওয়া যায় এবং দেশের যে কোনো স্থান থেকে অনলাইনে ক্রয়-বিক্রয় করা যায়।
সামগ্রিকভাবে চিন্তা করলে আমরা শেয়ার বাজারকে দুইটি ভাগে বিভক্ত করতে পারি।
- Primary Market
- Secondary Market
Primary market
এখানে কোম্পানিগুলো প্রথমবারের মত বিনিয়োগকারীদের কাছে তাদের শেয়ার ইস্যু করে । এটি সাধারণত Initial Public Offering (IPO) নামে পরিচিত। বিনিয়োগকারীরা শেয়ার ক্রয়ের জন্য IPO এর জন্য আবেদন করে থাকে। IPO আবেদন ব্যর্থ হলে আবেদনকারীদের সম্পূর্ন অর্থ ফেরত দেওয়া হয়।
Secondary market
এখানে বিনিয়োগকারীরা নিজেদের মধ্যে শেয়ার ক্রয় বিক্রয় করতে পারেন। এক্ষেত্রে বাজারে কোনো নির্দিষ্ট শেয়ারের চাহিদা (Demand) এবং যোগান (Supply) শেয়ারটির মূল্যকে প্রভাবিত করে। শেয়ারের মূল্য ওঠানামার ভিত্তিতে বিনিয়োগকারীদের জন্য শেয়ারের ক্রয়মূল্য ও বিক্রয়মূল্যের পার্থক্য তার লাভ বা ক্ষতি নির্দেশ করে।
সৈয়দ মিঠু
May 23, 2020Good information