BOND SERIES: BOND CLASSIFICATION
বন্ড এর প্রকারভেদ
বন্ডকে প্রাথমিক ভাবে ৪টি ভাগে ভাগ করা যায়। যা নিম্নরুপঃ
১. কর্পোরেট বন্ড (Corporate Bond):
কোম্পানি কতৃক ইস্যুকৃত বন্ডগুলো কে কর্পোরেট বন্ড বলে। কোম্পানি বা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ব্যাংক থেকে ঋণ না নিয়ে বন্ড থেকে টাকা উত্তলোন করার মূল কারন হচ্ছে বন্ড মার্কেট। এখানে সুদের হার কম থাকে এবং সুযোগ সুবিধা বেশি থাকে।
২.মিউনিছিপাল বন্ড (Municipal Bond):
যেসকল বন্ড বিভাগীয় সরকার অথবা মিউনিছিপালিটিস দ্বারা ইস্যুকরা হয় তাদের মিউনিছিপাল বন্ড বলা হয়। এ ধরনের বন্ড সাধারণত ট্যাক্স ফ্রি হয়ে থাকে।
৩. সরকারি বন্ড (Government Bond):
সরকারি বন্ড মূলত ট্রেজারি বন্ডগুলোকেই বলা হয়। যে ধার চুক্তি গুলোর মেয়াদ ১ বছর বা তার কম হয় তাদের বিল (Bill) বলে, ১ থেকে ১০ বছরের জন্য যেগুলো ইস্যু করা হত তাদের নোটস (Notes) বলে এবং ১০ বছরের অধিক সময়ের জন্য যেগুলো ইস্যু করা হয় তাদের বন্ড (Bond) বলা হয়।
৪. এজেন্সি বন্ড (Agency Bond):
সরকারের সাথে সম্পর্ক যুক্ত যে কোম্পানিগুলো আছে তারা যখন কোন বন্ড ইস্যু করে তাদের এজেন্সী বন্ড বলে। যেমন- বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি ও বাংলাদেশ ডিজেল প্লান্টস লিমিটেড।
বন্ড এর ধরণ, সুদ বা কুপন দেয়ার ধরণএবং ইস্যুয়ার কতৃক রিকল করার বিষয় বিবেচনা করলে বন্ডকে নিম্নোক্ত ভাবে ভাগ করা যায়ঃ
১. জিরো কুপন বন্ড (Zero Coupon Bond):
যে বন্ডগুলো কোন সুদ বা কুপন প্রদান করে না কিন্তু ফেসভেলুর থেকে ডিস্কাউন্ট (Discount) বা কম মূল্যে ইস্যু করা হয় তাদের জিরোকুপন বন্ড বলা হয়। এ ধরনের বন্ড গুলোতে মূলত ডিস্কাউন্ট প্রাইজের অংশ বন্ড হোল্ডারদের লাভ হয়। মেয়াদ শেষে বন্ড তার ফেসভেলুতে লিকুয়িড হয় অর্থাৎ বন্ড ইস্যুয়ার, বন্ড হোল্ডারকে ফেসভেলু বা আসল টাকা ফেরত দেয়।
২. কনভার্টিবল বন্ড (Convertible Bond):
যেসকল বন্ডে একটা নির্দিষ্ট সময় পরে বন্ড থেকে ইক্যুইটিতে (Equity) পরিবর্তন করার সুযোগ থাকে তাদের কনভার্টিবল বন্ড বলা হয়। যেমন- এবিসি কোম্পানি ১কোটি টাকার বন্ড ইস্যু করলো ১২% কুপন রেটে ১০ বছরের জন্য। কিন্তু একই কোম্পানি যদি জানতে পারে যে, একটা নির্দিষ্ট সময় পরে শেয়ারের দর যদি একটা নির্দিষ্ট মূল্যে বা তার অধিক মূল্যে ট্রেড হয় এবং ৮% কুপন রেট হয় তাহলে কিছু বিনিয়োগকারী তাদের বন্ড হোল্ডিংসকে শেয়ারে কনভার্ট করবে তাহলে কোম্পানি সাধারণ বন্ড ইস্যু না করে কনভার্টিবল বন্ড ইস্যু করবে।
কোম্পানির জন্য কনভার্টিবল বন্ড ইস্যু করা লাভজনক, কারন এতে কম সুদ (Interest) প্রদান করতে হয় এবং বন্ড হোল্ডাররা বন্ড থেকে ইক্যুইটিতে কনভার্ট হলে বর্তমান শেয়ার হোল্ডারগণ ডাইলুটেড (Diluted) হয়। যার ফলে কোম্পানিকে তাদের বন্ড এর টাকা ফেরত দেওয়া বা সুদ দেয়ার প্রয়োজন হয় না। উল্লেখ্য যে, কনভার্টিবল বন্ড প্রিফারেন্স শেয়ারে (Preference Share) কনভার্ট করা যায়।
৩. কলেবল বন্ড (Callable Bond):
কলেবল বন্ড হচ্ছে ইস্যুয়ার কতৃক বন্ড ম্যাচিউর হবার পূর্বে বন্ড বাই ব্যাক বা কল করার অপশন রাখা। উদাহরণ স্রুপ বলা যায়- এবিসি কোম্পানি ১কোটি টাকার বন্ড ইস্যু করলো ১০% কুপন রেটে ১০ বছরের জন্য। যদি ১০ বছর পূর্ণ হবার পূর্বে ইস্যুয়ার কোম্পানির ক্রেডিট কোয়ালিটি (Credit Quality) বৃদ্ধি পায় বা বাজারে সুদের হার কমে যায় তাহলে কোম্পানিটি তার বন্ড বাইব্যাক করে ৮% কুপন রেটে পুনরায় বন্ড ইস্যু করবে। এতে ইস্যুয়ারকে কম সুদ দিতে হবে।
কলেবল বন্ডে বিনিয়োগকারীদের জন্য ঝুঁকি থাকে কারন যেকোন সময়ে ইস্যুয়ার কতৃক বন্ডটি কলব্যাক বা বাইব্যাক করে নিতে পারে।
একটা বিষয় মনে রাখা ভাল যে, যখন বাজারে সুদের হার কমে যায় বন্ডের দাম বেড়ে যায় এবং যখন সুদের হার বৃদ্ধি পায় তখন বন্ডের দাম কমে যায়। অর্থাৎ বন্ডের মূল্য বৃদ্ধি পেলে বা সুদের হার কমে গেলে কলেবল বন্ডে বিনিয়োগ করা ঝুকিপূর্ন হয়ে যায়।
৪. পুটেবল বন্ড (Putable Bond):
পুটেবল বন্ড হচ্ছে যে বন্ডগুলো, ম্যচুরিটির পূর্বে বন্ড হোল্ডারদের বন্ড পুট বা সেল করার সুযোগ দেয় ইস্যুয়ারের কাছে। এটি একটি গুরত্বপূর্ণ বিষয়, কারন বিনিয়োগকারী বা বন্ড হোল্ডারগণ বাজারে সুদের হার বৃদ্ধি বা বন্ডের দর কমে যাওয়ার পূর্বেই বন্ড বিক্রিকরার সুযোগ পায়।
পুটেবল বন্ড বাজারে অন্যান্য বন্ড থেকে একটু বেশি মূল্যে ট্রেড হয় এর সেল বা পুট অপশন থাকার কারনে।
৫. ইনকাম বন্ড (Income Bond):
ইনকাম বন্ড হচ্ছে যে সকল বন্ডে ইস্যুয়ার কতৃক শধু মাত্র বন্ডের ফেস ভেলু বিনিয়োগকারীদের প্রদান করার কথা বলা থাকে। ইনকাম বন্ডের ক্ষেত্রে কুপন তখনি প্রদান করার হয় যখন কুপন দেয়ার মত পর্যাপ্ত পরিমাণ আয় করা সম্ভব হয়।
৬. পারপিচুটি বন্ড (Perpetuity Bond):
এই বন্ডের মূল বিষয় হচ্ছে এর কোন ম্যাচুরিটি প্রিয়োড নেই। বন্ড হোল্ডারগণ কুপন বা সুদ পাবে নিয়মিত ভাবে অনির্দিষ্ট কালের জন্য অথবা যতদিন ইস্যুয়ার বন্ডের মূল টাকা বা ফেসভেলু ফেরত না দেয়।
উপরোক্ত বন্ড ছাড়াও আরো যে সকল বন্ড রয়েছে – সভেরেইন বন্ড (Sovereign Bond), জুনিয়র বন্ড (Junior Bond), সিনিয়র বন্ড (Senior Bond) ইত্যাদি।