কীভাবে একটি কোম্পানির আর্থিক অবস্থা মূল্যায়ন করবো?
একটি কোম্পানির আর্থিক অবস্থা সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য একজন বিনিয়োগকারীকে তার বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে সহায়তা করে। সর্বাধিক মুনাফার জন্য, সম্ভাব্য বিনিয়োগ খাত মূল্যায়নের ক্ষেত্রে সবার প্রথমে নিট আয় বিশ্লেষণ করা সর্বোত্তম। কোন কোম্পানির আয় বিবরণীর নিচের ব্যালেন্সটি কোম্পানির লাভজনকতার একটি সূচক। কারণ এটি উৎপাদন, অবচয়, কর, সুদ এবং অন্যান্য সকল ব্যয় বাদ দেওয়ার পর কোম্পানিটির আর্থিক অবস্থা মূল্যায়ন করে। তবে নিট আয় ছাড়াও কিছু আর্থিক বিবরণী রয়েছে যেগুলো বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে বিশ্লেষণ করা উচিত।
পরিচালন আয়
পরিচালন আয় হল একটি কোম্পানির লাভজনকতা ও দক্ষতা পরিমাপের একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক যা সুদ ও কর পূর্ববর্তী আয়ের পরিমাণকে মূল্যায়ন করে। এটি সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের কোম্পানির ম্যনেজাররা কতটা সফলতার সাথে কোম্পানিটির পরিচালন কার্যক্রম সম্পাদনা করছে তা পর্যালোচনা করে। পরিচালন আয়ের পরিমাণ অধিক হওয়ার অর্থ হল কোম্পানিটি যথেষ্ট দক্ষতার সাথে তার আয় ও ব্যয় পরিচালন করছে।
শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ারের মূল্য ও শেয়ারের লাভজনকতা মূল্যায়ন.
আর্থিক বিবরণী শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ারের মূল্য ও শেয়ারের লাভজনকতা মূল্যায়ন করতে সাহায্য করে। এই মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন রকমের মেট্রিক্স ব্যবহার করা হয়। যেমন শেয়ার প্রতি আয় একটি কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ হতে প্রতি শেয়ারে আয়ের পরিমাণকে নির্দেশ করে। মূল্য-আয় অনুপাত শেয়ার প্রতি আয়ের সাথে শেয়ারের বর্তমান মূল্যের তুলনা করে। শেয়ারের বহিমূল্য বিনিয়োগকারীদের জন্য মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত একটি অন্যতম মেট্রিক্স। এটি বাজারের সাথে কোম্পানির শেয়ারের আভ্যন্তরীণ মূল্যের মূল্যায়ন করে।
লভ্যাংশ বণ্টন অনুপাত
লভ্যাংশ বণ্টন অনুপাত বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি কার্যকরী মেট্রিক্স যা একটি কোম্পানির প্রবৃদ্ধি, আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং শেয়ারহোল্ডারদের প্রদত্ত লভ্যাংশকে পরিমাপ করে। এটি লভ্যাংশ রূপে বিনিয়োগকারীদের প্রদত্ত আয়ের শতকরা হার পরিমাপ করে। এই অনুপাতের মান যত বেশি হয়, ধারনা করা হয় কোম্পানিটির আয়ের পরিমাণ তত বেশি ও স্থিতিশীল এবং কোম্পানিটি দক্ষতার সাথে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ বণ্টন করতে সক্ষম। আয়ের যে পরিমাণ অংশ লভ্যাংশ হিসেবে বণ্টন না করে সঞ্চিত রাখা হয় তা এটাই নির্দেশ করে যে কোম্পানিটি তার আয়ের কী পরিমাণ ব্যবসায় সম্প্রসারনের জন্য কোম্পানিতে পুনরায় বিনিয়োগ করছে।
সম্পদ এবং দায়সমূহ
কোনো কোম্পানির ব্যালেন্সশিটে থাকা সম্পদ ও দায়ের পরিমাণ বিশ্লেষণের মাধ্যমে একজন বিনিয়োগকারী কোম্পানিটির আর্থিক অবস্থা ও ঋণের পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত ধারণা পেয়ে থাকে। ঋণ অনুপাত ও চলতি অনুপাত কোম্পানির আর্থিক বিবরণীতে বর্ণিত তথ্য হতে গণনা করা হয়। এগুলো একজন সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীকে কোম্পানির ঋণ পরিশোধ দক্ষতা মূল্যায়ন করতে সাহায্য করে। এছাড়াও একটি কোম্পানির আর্থিক অবস্থা ও সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধি মূল্যায়নের ক্ষেত্রে কোম্পানির অধিকাংশ বৃহদায়তন ব্যয়সমূহ পর্যালোচনা ব্যপকভাবে সাহায্য করে।